|

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ২য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ প্রশ্ন ও উত্তর

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ২য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ: দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রথম পরিচ্ছেদে প্রমিত ভাষার নানা দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। প্রমিত ভাষা দেশের সকল মানুষের বোধগম্য ভাষা। বাংলাদেশের সব অঞ্চলের মানুষের ভাষা এক রকম নয়। অঞ্চলভেদে অনেক শব্দের উচ্চারণ আলাদা হয়, কখনো কখনো একই অর্থে ভিন্ন ভিন্ন শব্দও ব্যবহার করা হয়। ভাষাগত এই পার্থক্যকে বলা হয় আঞ্চলিক ভাষা। আঞ্চলিক ভাষার অপর নাম উপভাষা।

অশিক্ষিত লোকেরা এই অঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করে। অনেক সময় লেখা-পড়া জানা লোকও নিজের অঞ্চলের ভাষার প্রভাব থেকে রেহাই পায় না। এই আঞ্চলিক ভেদ সাধারণত অঞ্চলের নামে পরিচিতি পায়। যেমন- নোয়াখালীর ভাষা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভাষা, চট্টগ্রামের ভাষা, সিলেটের ভাষা, বরিশালের ভাষা, যশোরের ভাষা, বগুড়ার ভাষা, ময়মনসিংহের ভাষা ইত্যাদি। এক অঞ্চলের মানুষের মুখের ভাষা অন্য অন্য অঞ্চলের মানুষ বুঝতে পারে না। তাই প্রয়োজন হয়ে পড়ে এমন একটি ভাষা, যা সারা দেশের মানুষ সহজে বুঝতে পারে। এটাই হলো প্রমিত ভাষা। ‘ছেলে’ শব্দটি প্রমিত।

বিভিন্ন অঞ্চলে এটির রূপভেদ হলো— পুত, ব্যাটা, পোলা, পোয়া, হুত, ছাওয়াল, ব্যাডা ইত্যাদি। সারা দেশের মানুষের কাছে এগুলো দুর্বোধ্য হলেও ‘ছেলে’ বললে কারও পক্ষে বুঝতে অসুবিধা হয় না। ছড়া পড়তে নিশ্চয় শিক্ষার্থীদের ভালো লাগে। “চিঠি বিলি’ ছড়াটিতে ভালো লাগার মতো অনেক বিষয় আছে। এই ছড়ার অনেক শব্দ বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ হয়তো বিভিন্নভাবে উচ্চারণ করে। আবার কোনো কোনো অঞ্চলে অনেক প্রমিত শব্দের পরিবর্তে অন্য শব্দ ব্যবহার করে। খেলার সময়ে মাঠে কোনো বিষয় নিয়ে তর্কের ভাষা, পড়াশোনা নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে আলাপের ভাষা, ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে দরকষাকষির ভাষা এক রকম নয়। তাই দেশের সকলের বোঝার জন্য প্রমিত ভাষার চর্চা করা অপরিহার্য।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ২য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ স্পেশাল কুইজ

প্রশ্ন ১। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের ভাষায় কী আছে?
উত্তর: বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের ভাষায় ভিন্নতা আছে।

প্রশ্ন ২। অঞ্চলভেদে কী বদলে যায়?
উত্তর: অঞ্চলভেদে অনেক শব্দ বদলে যায়।

প্রশ্ন ৩। ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলের ভাষার রূপভেদকে কী বলে?
উত্তর: ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলের ভাষার রূপভেদকে আঞ্চলিক ভাষা বলে।

প্রশ্ন ৪। এক অঞ্চলের মানুষের ভাষা অন্য অঞ্চলের মানুষের বুঝতে সমস্যা হয় কেন?
উত্তর: এক অঞ্চলের মানুষের ভাষা অন্য অঞ্চলের মানুষের বুঝতে সমস্যা হয় ভাষার আঞ্চলিক রূপের জন্য।

প্রশ্ন ৫। সব অঞ্চলের মানুষের সহজে বোঝার জন্য ভাষার নির্দিষ্ট রূপকে কী বলে?
উত্তর: সব অঞ্চলের মানুষের সহজে বোঝার জন্য ভাষার নির্দিষ্ট রূপকে প্রমিত ভাষা বলে।

প্রশ্ন ৬। ‘কই’ শব্দের ‘ক’ এবং ‘খই’ শব্দের ‘খ’ উচ্চারণের সময় কোনটিতে বেশি বাতাস বের হয়?
উত্তর: ‘কই’ শব্দের ‘ক’ এবং ‘খই’ শব্দের ‘খ’ উচ্চারণের সময় ‘খই’ শব্দের ‘খ’ উচ্চারণে বেশি বাতাস বের হয়।

প্রশ্ন ৭। ‘দান’ শব্দটির প্রথম ধ্বনির উচ্চারণ করতে বাতাস বেশি না কম বের হয়?
উত্তর: ‘দান’ শব্দটির প্রথম ধ্বনির উচ্চারণ করতে বাতাস কম বের হয়।

প্রশ্ন ৮। ‘চিঠি বিলি’ ছড়াটি কে লিখেছেন?
উত্তর: ‘চিঠি বিলি’ ছড়াটি রোকনুজ্জামান খান লিখেছেন।

প্রশ্ন ৯। ‘হাট টিমা টিম’ নামের বইটির লেখক কে?
উত্তর: ‘হাট টিমা টিম’ নামের বইটির লেখক রোকনুজ্জামান খান।

প্রশ্ন ১০। রোকনুজ্জামান খান কী নামে পরিচিত ছিলেন?
উত্তর: রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই নামে পরিচিত ছিলেন।

প্রশ্ন ১১। রোকনুজ্জামান খান শিশু-কিশোরদের জন্য কোন সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর: রোকনুজ্জামান খান শিশু-কিশোরদের জন্য কচিকাঁচার মেলা সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রশ্ন ১২। ‘কচিকাঁচার মেলা’ কত সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়?
উত্তর: ‘কচিকাঁচার মেলা’ ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়।

প্রশ্ন ১৩। ছাতা মাথায় চিঠি বিলি করতে কে চলছে?
উত্তর: ছাতা মাথায় চিঠি বিলি করতে ব্যাঙ চলছে।

প্রশ্ন ১৪। সাঁঝের বেলার রোদে কার চোখ ঝলসে গেছে?
উত্তর: সাঁঝের বেলার রোদে বিলের খলসের চোখ ঝলসে গেছে।

প্রশ্ন ১৫। ভেটকি মাছের নাতনি কোথায় গেছে?
উত্তর: ভেটকি মাছের নাতনি দেশের বাইরে গেছে।

প্রশ্ন ১৬। কে চিঠিতে সারা দেশে এবার দারুণ বাদলা হওয়ার কথা লিখেছে?
উত্তর: বিলের কাতলা সারা দেশে এবার দারুণ বাদলা হওয়ার কথা লিখেছে চিঠিতে।

প্রশ্ন ১৭। নদী পার হওয়ার নৌকাকে কী বলে?
উত্তর: নদী পার হওয়ার নৌকাকে খেয়া বলে।

প্রশ্ন ১৮। একনাগাড়ে বৃষ্টি হলে কী বলে?
উত্তর: একনাগাড়ে বৃষ্টি হলে বাদলা বলে।

প্রশ্ন ১৯। উজ্জ্বল আলোয় চোখ ধাঁধানোকে কী বলে?
উত্তর: উজ্জ্বল আলোয় চোখ ধাঁধানোকে ঝলসানো বলে।

প্রশ্ন ২০। চিঠি বিলি করা মানে কী?
উত্তর: চিঠি বিলি করা মানে চিঠি পৌঁছে দেওয়া।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ২য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। বলতে পারবে, বইয়ের ভাষাকে কী ভাষা বলা হয়? অঞ্চলভেদে মানুষের ভাষার পার্থক্য থাকলেও সকল অঞ্চলের মানুষের জন্য একই ভাষায় বই লেখা হয় কেন?
উত্তর: বইয়ের ভাষাকে প্রমিত ভাষা বলে। বাংলাদেশের বিভন্ন অঞ্চলের মানুষের ভাষায় ভিন্নতা আছে। যেমন— যশোর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা বরিশাল, সিলেট, নোয়াখালী, চট্টগ্রামের মানুষ একভাবে কথা বলে না। ‘ছেলে’ শব্দটিকে কোনো অঞ্চলের মানুষ বলতে পারে ‘পুত’, কোনো অঞ্চলে ‘ব্যাটা’, কোনো অঞ্চলে ‘পোলা’। এভাবে অঞ্চলভেদে অনেক শব্দই বদলে যায়। কখনো কখনো শব্দের উচ্চারণে পার্থক্য ঘটে। যেমন— ‘ছেলে’ শব্দটি উচ্চারিত হতে পারে ‘চেলে’ বা ‘শেলে’। ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলের ভাষার এই রূপভেদকে বলা হয় আঞ্চলিক ভাষা।

প্রশ্ন ২। আমরা কথা বলি, পাখিরা ভিন্ন ভিন্ন স্বরে ডাকাডাকি করে। এমনিভাবে সকল প্রাণী কোনো না কোনো শব্দ করে, বলো তো প্রাণীরা তাদের মুখ দিয়ে এমনভাবে শব্দ বের করে কেন? এ শব্দকে তুমি কী হিসেবে চিহ্নিত করবে?
উত্তর: মানুষ কথা বলে। অন্য প্রাণীরা বিভিন্ন শব্দ করে ডাকাডাকি করে। অর্থাৎ মানুষসহ সকল প্রাণী মুখ দিয়ে শব্দ বের করে। মূলত এসব শব্দ দিয়ে সকল প্রাণী তাদের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে থাকে। এসব শব্দকে আমি ভাষা হিসেবে চিহ্নিত করতে পারি। আমরা কথা বলার মাধ্যমে আমাদের মনের ভাব প্রকাশ করি। কথা বলাটা আমাদের ভাষা। এমনিভাবে ডাকাডাকি করে পাখিরা তাদের মাঝে যোগাযোগ করে। ডাকাডাকি করা পাখিদের ভাষা।

প্রশ্ন ৩। তুমি নিশ্চয়ই গ্রামের মানুষদের সাথে কথা বলেছো। আমরা যে ভাষায় লেখাপড়া করি, কথা বলি, সেই ভাষার সাথে তাদের ভাষার কোনো পার্থক্য লক্ষ করেছো কি? এর কারণ বলতে পারবে?
উত্তর: আমি গ্রামের মানুষের সাথে কথা বলেছি এবং লক্ষ করেছি আমরা যে ভাষায় লেখাপড়া করি, কথা বলি সে ভাষার সাথে তাদের ভাষার পার্থক্য রয়েছে। তারা আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে। আমরা জানি একেক অঞ্চলের মানুষ একেক ধরনের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে থাকে। এই কারণে আমরা যে ভাষায় পড়ালেখা করি বা কথা বলি, সেই ভাষার সাথে তাদের ভাষার পার্থক্য বিদ্যমান।

প্রশ্ন ৪। গ্রামের পোলাপাইনরা মাঠে খেলে, পুশকুনিতে গোসল করে, নদীতে সাঁতার কাটে। তাগর দেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। এখানে কয়টি আঞ্চলিক শব্দ আছে? এগুলোর প্রমিত রূপ কী হবে বলতে পারবে?
উত্তর: এখানে তিনটি আঞ্চলিক শব্দ আছে। যেগুলো হলো- ১. পোলাপাইন, ২. পুশকুনি, ৩. তাগর। শব্দুগলোর প্রমিত রূপ হবে— ১. ছেলেরা, ২. পুকুর এবং ৩. তাদের।


আশাকরি “৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ২য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ প্রশ্ন ও উত্তর” আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। ভিডিও ক্লাস করতে সাবক্রাইব করে রাখতে পারেন আমাদের YOUTUBE চ্যানেল এবং আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে চাইলে কানেক্ট থাকতে পারেন আমাদের FACEBOOK পেজে।