১৫ আগস্ট সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা – জাতীয় শোক দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য
আপনি কি ১৫ আগস্ট সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা বা জাতীয় শোক দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য খুজতেছেন? তাহলে আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের জন্য। আজকের আর্টিকেলে ১৫ আগস্ট সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা বা জাতীয় শোক দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।
১৫ আগস্ট বাংলার ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ভোরের আলো ফোটার আগেই স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, ক্ষমতালোভী, নরপিশাচ কুচক্রী মহল ৷ বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে জুড়ে দেয় কৃষ্ণ দাগ। মানচিত্রের কাঁধে চাপিয়ে দেয় ইতিহাসের সবচেয়ে ভারী বোঝা।
১৫ আগস্ট সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা
কেঁদেছিল আকাশ, ফুপিয়ে ছিল বাতাস। বৃষ্টিতে নয়, ঝড়ে নয়, অনুভূতি ছিল পিতা হারানো শোকের। প্রকৃতি কেঁদেছিল কারণ মানুষ কাদতে পারেনি। ঘাতকের উদ্যত রক্তচক্ষু তাদের কাদতে দেয়নি। তবে ভয়াতর বাংলার প্রতিটি ঘর থেকে এসেছিল চাপা দীর্ঘশ্বাস।
কি নিষ্ঠুর, কি ভয়াল, ভয়ঙ্কর সেই রাত। আজ রক্তঝরা, অশ্রুভেজা ১৫ ই আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস। বাঙালি জাতির শোকের দিন।
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় সুধিবৃন্দ,
প্রথমেই আমি ধন্যবাদ জানাই উক্ত অনুষ্ঠানের আয়োজক কে। এর পাশাপাশি ধন্যবাদ জানাই উপস্থিত সভাপতি সহ সবাইকে। আমি আরো ধন্যবাদ জানাতে চাই জাতির এই বিশেষ শোকের দিনে আমাকে আপনাদের সামনে বক্তৃতা দেয়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য।
১৯৭৫ সালের এই দিনে ভোরের আলো ফোটার আগেই স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, ক্ষমতালোভী, নরপিশাচ কুচক্রী মহল। বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে জুড়ে দেয় কৃষ্ণ দাগ। মানচিত্রের কাঁধে চাপিয়ে দেয় ইতিহাসের সবচেয়ে ভারী বোঝা।
দেশি-বিদেশি চক্রান্ত কারী, তথা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী সাম্রাজ্যবাদী শক্তির এদেশীয় দোসরদের চরম বিশ্বাসঘাতকতা কাছে জাতির জনকের বিশ্বাস ভেঙ্গে পড়েছিল ১৫ আগস্ট সেই কাল রাতে।
বঙ্গবন্ধু ও তার স্বজনদের রক্তে সেদিন প্লাবিত হয় ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের সেই ঐতিহাসিক বাড়ি। অস্তমিত হয়েছিল জাতীয় গৌরব এর প্রতীক সূর্যের মতো অনন্য এক অধ্যায়।
১৫ আগস্ট সুবে সাদিকের সময় পবিত্র আযানের ধ্বনি কে বিদীর্ণ করে ঘাতকের মেশিনগানের গুলি। ঝাঁজরা হয়ে ওঠে স্বাধীন বাংলার বুক। সেদিন ঘাতকেরা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেনি, তাদের হাতে প্রাণ হারিয়েছিল বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল।
পৃথিবীর এই জঘন্য হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেনি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব তার ছেলে আরিফ, মেয়ে বেবি ও সুকান্ত বাবু। বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মনি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, আব্দুল্লাহ ইবনে খান রিন্টু পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন।
ওই সময় দেশের বাইরে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা।
বঙ্গবন্ধুর হত্যার সকল দুরভিসন্ধির সাথে সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সম্রাজ্যবাদী ও পাকিস্তানের চক্র এবং তাদের এদেশীয় দালালদের গোপন সম্পর্কের কথা আজ দেশের মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে।
আজ মানুষ বুঝতে পেরেছে বঙ্গবন্ধু হত্যার উদ্দেশ্য ছিলো বাঙালি জাতি কে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে বাংলাদেশের খাম চিরতরে মুছে ফেলবে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে। কিন্তু তাদের সেই বিশ্বাস ঘাতকতা, উচ্চ বিলাসী ধ্যান ধারণা বাস্তব রূপ লাভ করে নি।
সূর্য অস্তমিত হলে তারপর জোনাকিরা জ্বলে, কিন্তু জোনাকিরা কখনেই সূর্যের বিকল্প হতে পারে না। যতই দিন যাচ্ছে এ সত্য স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হচ্ছে।
বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চিরঞ্জীব। তার চেতনা অবিনশ্বর। মুজিব আদর্শে শানিত বাংলার আকাশ, বাতাস, জল, সমতল। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিনাশিত চেতনা ও আদর্শ চির প্রবাহমান থাকবে।
জাতির পিতার স্বপ্ন ছিলো ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ জনগনের মুক্তির যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ক্ষুধা ও দারিত্রতাকে জয় করে বিশ্ব সভায় উন্নয়নশীল, মর্যাদাবান জাতি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল।
প্রতিবছর এই দিনের মত আজও যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাব গম্ভীর্যে জাতিয় শোক দিবস জাতীয় শোন দিবস ও বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকি পালিত হচ্ছে। পুরো জাতি গভীর শোক ও শ্রদ্ধায় জাতির শ্রষ্ঠ সন্তানকে স্মরণ করছে।
প্রতিবছর দিনটি আসে বাঙালির হৃদয়ে শোক ও কষ্টের দীর্ঘশ্বাস হয়ে। শুধু আনুষ্ঠানিকতার বৃত্তে বন্দি না থেকে চিন্তামনন ও কর্মে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ ও তা বাস্তবায়ন করতে পারলে তার আরদ্ধ সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
তার স্বপ্নের গণতান্ত্রিক সমাজ ভিত্তিক সুখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়াই আজকের এই জাতীয় শোক দিবসের অঙ্গীকার, ধন্যবাদ।
🔰🔰 আরও দেখুন: ১৫ আগস্ট সম্পর্কে রচনা পিডিএফ
আশাকরি “১৫ আগস্ট সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা” আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। ভিডিও ক্লাস করতে সাবক্রাইব করে রাখতে পারেন আমাদের YOUTUBE চ্যানেল এবং আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে চাইলে কানেক্ট থাকতে পারেন আমাদের FACEBOOK পেজে।