|

স্বাধীনতার স্থাপতি বঙ্গবন্ধু রচনা (১২০০ শব্দ)

আপনি কি স্বাধীনতার স্থাপতি বঙ্গবন্ধু রচনা খুজতেছেন? তাহলে আজকের আর্টিকেল টি আপনার জন্য।

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঘাতকদের হাতে স্বপরিবার সহ নিহত হন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বর্তমানে এই দিনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রচনা ও নানা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

স্বাধীনতার স্থাপতি বঙ্গবন্ধু রচনা
স্বাধীনতার স্থাপতি বঙ্গবন্ধু রচনা

২০২৩ সালে এই প্রতিযোগিতার আয়োজনে ৯ম থেকে ১০ম শ্রেণির জন্য রচনা হিসাবে থাকছে স্বাধীনতার স্থাপতি বঙ্গবন্ধু রচনা রচনা। স্বাধীনতার স্থাপতি বঙ্গবন্ধু রচনা রচনা টি নিচে শেয়ার করা হলো।


স্বাধীনতার স্থাপতি বঙ্গবন্ধু রচনা

ভূমিকা

বিশ্বের এমন কিছু দেশ আছে যাদের স্বাধীনতার জন্য এক একজন মহীরুহ সদৃশ দেশনেতার অবদান সর্বাধিক মর্যাদা ও স্বীকৃতি পায়। এই ব্যক্তিই জাতির জনক ও দেশের স্থপতিরূপে নন্দিত হন। বাঙালির স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান নেতা সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার নেতৃত্বেই পৃথিবীর ইতিহাসে আর একটি স্বাধীনদেশের জন্ম হয় তার নাম বাংলাদেশ। বাংলাদেশের নামের সাথে, ইতিহাসের পাতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মিশে আছে, স্বর্ণাক্ষরে লিখিত হয়েছে; অবিনশ্বর ও চির অমর সে নাম। যেমন আছে রাশিয়ায় ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন, আমেরিকায় আব্রাহাম লিংকন, ভিয়েতনামে হো চি মিন চিনে মাও সেতুঙ, তুরস্কে কামাল আতাতুর্ক। যুগোশ্লাভিয়ায় মার্শাল টিটো, ভারতবর্ষে মহাত্মা গান্ধি, দক্ষিণ আফ্রিকায় নেলসন ম্যান্ডেলা, কিউবায় ফিদেল ক্যাস্ট্রো, ফিলিস্তিনে ইয়াসির আরাফাত — এই মহান ব্যক্তিরা ইতিহাসের বাঁক ঘুরে ঘুরে কালকালান্তর মানুষের মাঝে চির অবিনশ্বর, অক্ষয় অমর।

বঙ্গবন্ধুর জন্ম

গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা শেখ লুৎফর রহমান, মা সাহেরা খাতুন।

ছাত্রজীবন ও ছাত্র আন্দোলন

বঙ্গবন্ধু গোপালগঞ্জ থেকে স্কুল জীবন শেষ করে কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। ১৯৪৭ সালে ওই কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। শেষ মুজিব ছাত্রজীবন থেকেই তৎকালীন মুসলিম লীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই রাজনীতির পথ ধরেই তিনি ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হন। ১৯১৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ গঠিত হয়। শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিম্ন বেতনভুক্ত কর্মচারীদের সমর্থনে ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলেন। এই আন্দোলনের কারণে শেখ মুজিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হন।

রাজনীতি ও কারাবাস

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সারা জীবনই ছিল আপোসহীন রাজনীতি আর এজন্য তাকে সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালে তিনি পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদ এবং ১৯৫৫ সালে গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত অসংখ্যবার কারা বরণ করতে হয়েছে। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হলে শেখ মুজিব যুগ্ম হলে শেখ মুজিব গ্রেফতার হন। ১৯৫৯ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। হন। পূর্বপাকিস্তান সরকারের দুবার মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

স্বাধীনতা যুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ এক অভিন্ন ইতিহাস। রেখে যুদ্ধ করেন। ত্রিশ লক্ষ মানুষ শহিদ হন। জীবনের বিনিময়ে বাঙালিরা স্বাধীনতা অর্জন করেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বঙ্গবন্ধুর ডাকে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষ পাকিস্তানী স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে জীবন বাজী দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বিরোধীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে।

১৯৭৫ সালের হত্যাকাণ্ড

স্বাধীন বাংলাদেশে দুষ্কৃতিকারী কিছু সংখ্যক সামরিক আমলা, ক্ষমতালোভী দেশ বাংলাদেশের ইতিহাসে কালো অধ্যায়ের সূচনা করা হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড কেবল ব্যক্তি মুজিবকে হত্যা করেনি, বরং ছিল। একাত্তরের পরাজিত রাজাকার আলবদর, পরাজিত পাকিস্তান এবং সাম্রাজ্যবাদের নীল নকশায় ইতিহাসের এই এটি ছিল একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। যার মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক দর্শনকে নিশ্চিহ্ন করবার আন্তর্জাতিক জঘন্যতম নৃশংস হত্যাকাণ্ড। এই ঘটনার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র বিরোধী। রাষ্ট্র কায়েম করে।

অবশেষে খুনি চক্রের বিচার

মানবতা বিরোধী ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের বিচার নিষিদ্ধ করে। দেয়া হলে দীর্ঘদিন জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্ভব হয়নি। জাতীয় আন্তর্জাতিক দাবির প্রেক্ষিতে ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে ওই কালো আইন বাতিল করে বিচারের পথ খুলে দেয়। হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর পর মামলা করা সম্ভব হয়। তেরো বছর মামলা চলে। আদালত ১৫ জনের ফাঁসির আদেশ দেয়। হাইকোর্টে আপিল করলে ১১ নভেম্বর ২০০৯ তারিখে রায় বহাল রাখে। চৌত্রিশ বছর পর জাতির জনক হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায়ে প্রমাণিত হলো ওটি ছিল জঘন্যতম অপরাধ। এ বিচারের মধ্য দিয়ে জাতি তার কলঙ্কের দাগ মূহল।

উপসংহার

মহাকাল ধরে বাঙালি তথা বাংলাদেশের মানুষ তাদের অবিসংবাদিত নেতা, জাতির জনক, বাঙালির প্রাণ বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করবে:
‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান
ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।”


🔰🔰 আরও দেখুন: জাতীয় শোক দিবস রচনা PDF – ১৫ আগস্ট সম্পর্কে রচনা পিডিএফ
🔰🔰 আরও দেখুন: ১৫ আগস্ট সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা – জাতীয় শোক দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য
🔰🔰 আরও দেখুন: আমাদের জাতির পিতা রচনা (১০০০ শব্দ)


আশাকরি “স্বাধীনতার স্থাপতি বঙ্গবন্ধু রচনা” আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। ভিডিও ক্লাস করতে সাবক্রাইব করে রাখতে পারেন আমাদের YOUTUBE চ্যানেল এবং আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে চাইলে কানেক্ট থাকতে পারেন আমাদের FACEBOOK পেজে।